পরাগ সংযোগকারী নীতি তৈরি: জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য একটি বিশ্বব্যাপী নির্দেশিকা

মৌমাছি, প্রজাপতি, মথ, মাছি, গুবরে পোকা, পাখি এবং বাদুড় সহ পরাগ সংযোগকারীরা আমাদের বাস্তুতন্ত্রের স্বাস্থ্য এবং খাদ্য সরবরাহের স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য। তারা বিশ্বের প্রায় ৮০% সপুষ্পক উদ্ভিদ এবং ৭৫% বিশ্বব্যাপী খাদ্য ফসলের প্রজননে অবদান রাখে। পরাগায়নের অর্থনৈতিক মূল্য বার্ষিক শত শত বিলিয়ন ডলার অনুমান করা হয়। তবে, বাসস্থান হারানো, কীটনাশকের ব্যবহার, জলবায়ু পরিবর্তন, রোগ এবং আক্রমণাত্মক প্রজাতির কারণে বিশ্বজুড়ে পরাগ সংযোগকারীর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। এই সংকট মোকাবিলায় স্থানীয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কার্যকর পরাগ সংযোগকারী নীতি জরুরিভাবে প্রয়োজন।

কেন আমাদের পরাগ সংযোগকারী নীতি প্রয়োজন

পরাগ সংযোগকারীর সংখ্যা হ্রাস নিম্নলিখিত বিষয়গুলির জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করে:

• খাদ্য নিরাপত্তা: ফসলের ফলন হ্রাস এবং খাদ্যের দাম বৃদ্ধি।
• বাস্তুতন্ত্রের স্বাস্থ্য: জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি এবং বাস্তুতন্ত্র পরিষেবা ব্যাহত হওয়া।
• অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা: কৃষি, উদ্যানপালন এবং সংশ্লিষ্ট শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব।

পরাগ সংযোগকারী নীতিগুলি এই হুমকিগুলি হ্রাস করার লক্ষ্যে কাজ করে:

• পরাগ সংযোগকারীর বাসস্থান রক্ষা এবং পুনরুদ্ধার করা।
• কীটনাশকের সংস্পর্শ কমানো।
• টেকসই কৃষি পদ্ধতির প্রচার করা।
• পরাগ সংযোগকারীদের গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।

কার্যকর পরাগ সংযোগকারী নীতির মূল উপাদান

কার্যকর পরাগ সংযোগকারী নীতি তৈরির জন্য একটি ব্যাপক এবং সহযোগিতামূলক পদ্ধতির প্রয়োজন। এখানে বিবেচনা করার জন্য মূল উপাদানগুলি রয়েছে:

১. স্থানীয় প্রেক্ষাপট বোঝা

পরাগ সংযোগকারীর সংখ্যা, কৃষি পদ্ধতি এবং পরিবেশগত অবস্থা অঞ্চলভেদে উল্লেখযোগ্যভাবে ভিন্ন হয়। তাই, প্রতিটি স্থানীয় প্রেক্ষাপটে নির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগগুলি বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে রয়েছে:

• পরাগ সংযোগকারীর সংখ্যা এবং তাদের আবাসস্থলের পুঙ্খানুপুঙ্খ মূল্যায়ন করা।
• অঞ্চলে পরাগ সংযোগকারীদের জন্য প্রধান হুমকিগুলি চিহ্নিত করা।
• কৃষক, মৌমাছি পালনকারী, সংরক্ষণ সংস্থা এবং সরকারি সংস্থা সহ স্থানীয় অংশীদারদের সাথে যুক্ত হওয়া।
• পরাগ সংযোগকারী সংরক্ষণে প্রভাব ফেলে এমন সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক কারণগুলি বিবেচনা করা।

উদাহরণ: ইউরোপে, ইউরোপীয় খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ (EFSA) মৌমাছির উপর কীটনাশকের ঝুঁকি মূল্যায়ন করে, যেখানে মৌমাছির প্রজাতি এবং কৃষি পদ্ধতির আঞ্চলিক পার্থক্য বিবেচনা করা হয়।

২. স্পষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ

পরাগ সংযোগকারী নীতিগুলির সুস্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য থাকা উচিত যা পরিমাপযোগ্য, অর্জনযোগ্য, প্রাসঙ্গিক এবং সময়-সীমাবদ্ধ (SMART)। এই লক্ষ্যগুলি বৃহত্তর জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ লক্ষ্যগুলির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।

SMART লক্ষ্যের উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে:

• Y বছরের মধ্যে পরাগ সংযোগকারীর বাসস্থান X% বৃদ্ধি করা।
• প্রধান কৃষি অঞ্চলে কীটনাশকের ব্যবহার Z% হ্রাস করা।
• শিক্ষামূলক প্রচারণার মাধ্যমে পরাগ সংযোগকারী সংরক্ষণ সম্পর্কে জনসচেতনতা W% বৃদ্ধি করা।

৩. পরাগ সংযোগকারীর বাসস্থান রক্ষা এবং পুনরুদ্ধার

বাসস্থান হারানো পরাগ সংযোগকারী হ্রাসের অন্যতম প্রধান কারণ। নীতিগুলির উচিত বিদ্যমান পরাগ সংযোগকারীর বাসস্থান রক্ষা এবং অবক্ষয়িত এলাকা পুনরুদ্ধারের উপর মনোযোগ দেওয়া। এটি নিম্নলিখিত উপায়ে অর্জন করা যেতে পারে:

• পরাগ সংযোগকারী সংরক্ষিত এলাকা এবং বন্য ফুলের তৃণভূমির মতো সুরক্ষিত এলাকা স্থাপন করা।
• হেজরো (বেড়ার মতো গাছ) এবং কভার ক্রপ (মাটি ঢাকার ফসল) লাগানোর মতো বাসস্থান-বান্ধব কৃষি পদ্ধতির প্রচার করা।
• রাস্তার ধার, রেলপথ এবং অন্যান্য সরকারি জমিতে দেশীয় গাছপালা পুনরুদ্ধার করা।
• কমিউনিটি গার্ডেন এবং সবুজ ছাদের মতো শহুরে পরাগ সংযোগকারীর বাসস্থান তৈরি করা।

উদাহরণ: ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক দেশে কৃষি-পরিবেশ প্রকল্প রয়েছে যা কৃষকদের পরাগ সংযোগকারী-বান্ধব পদ্ধতি বাস্তবায়নের জন্য আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করে।

৪. কীটনাশকের সংস্পর্শ কমানো

কীটনাশক, বিশেষ করে নিওনিকোটিনয়েড, পরাগ সংযোগকারীদের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। নীতিগুলির উচিত কীটনাশকের সংস্পর্শ কমানোর লক্ষ্যে কাজ করা:

• পরাগ সংযোগকারীদের জন্য ক্ষতিকারক কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা।
• সমন্বিত কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনা (IPM) কৌশল প্রচার করা যা কীটনাশকের ব্যবহার কমায়।
• জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মতো বিকল্প কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির উন্নয়ন এবং গ্রহণকে উৎসাহিত করা।
• কীটনাশকের নিরাপদ এবং দায়িত্বশীল ব্যবহার সম্পর্কে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রদান করা।

উদাহরণ: ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ বেশ কয়েকটি দেশ এবং অঞ্চল মৌমাছির উপর ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে নিওনিকোটিনয়েড কীটনাশকের ব্যবহার নিষিদ্ধ বা সীমিত করেছে।

৫. টেকসই কৃষি পদ্ধতির প্রচার

টেকসই কৃষি পদ্ধতি পরাগ সংযোগকারী এবং কৃষক উভয়কেই উপকৃত করতে পারে। নীতিগুলির উচিত এমন পদ্ধতির প্রচার করা যা:

• ফসল এবং কৃষি ব্যবস্থায় বৈচিত্র্য আনা।
• চাষ এবং মাটির ক্ষয়ক্ষতি কমানো।
• মাটির স্বাস্থ্য উন্নত করতে এবং পরাগ সংযোগকারীর বাসস্থান সরবরাহ করতে কভার ক্রপ ব্যবহার করা।
• সারের ব্যবহার হ্রাস করা এবং পুষ্টি চক্রের প্রচার করা।
• জৈব চাষ পদ্ধতি সমর্থন করা।

উদাহরণ: কৃষি বনায়ন, যা কৃষি ব্যবস্থায় গাছ এবং ঝোপঝাড়কে একীভূত করে, পরাগ সংযোগকারীদের জন্য মূল্যবান বাসস্থান সরবরাহ করতে পারে এবং খামারের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারে।

৬. জনসচেতনতা বৃদ্ধি

পরাগ সংযোগকারী সংরক্ষণের জন্য সমর্থন তৈরিতে জনসচেতনতা অপরিহার্য। নীতিগুলিতে নিম্নলিখিত কৌশলগুলি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত:

• পরাগ সংযোগকারীদের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে শিক্ষামূলক উপকরণ এবং প্রচারণা তৈরি করা।
• পরাগ সংযোগকারী পর্যবেক্ষণ এবং সংরক্ষণ কার্যক্রমে নাগরিকদের যুক্ত করা।
• পরাগ সংযোগকারী-বান্ধব বাগান এবং ল্যান্ডস্কেপিং পদ্ধতির প্রচার করা।
• নাগরিক বিজ্ঞান প্রকল্পগুলিকে সমর্থন করা যা পরাগ সংযোগকারীর সংখ্যার উপর ডেটা সংগ্রহ করে।

উদাহরণ: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রেট সানফ্লাওয়ার প্রজেক্ট একটি নাগরিক বিজ্ঞান প্রকল্প যা স্বেচ্ছাসেবকদের সূর্যমুখীতে পরাগ সংযোগকারীর আনাগোনা পর্যবেক্ষণে নিযুক্ত করে।

৭. পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়ন

নীতিগুলিতে তাদের কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ এবং পরাগ সংযোগকারীর সংখ্যার উপর তাদের প্রভাব মূল্যায়নের জন্য প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এর মধ্যে রয়েছে:

• পরাগ সংযোগকারীর সংখ্যা এবং বাসস্থানের উপর ভিত্তি ডেটা স্থাপন করা।
• সময়ের সাথে সাথে পরাগ সংযোগকারীর সংখ্যার পরিবর্তন ট্র্যাক করা।
• পরাগ সংযোগকারীর স্বাস্থ্য এবং বাসস্থানের উপর নীতিগত হস্তক্ষেপের প্রভাব মূল্যায়ন করা।
• সময়ের সাথে সাথে নীতিগুলি অভিযোজিত এবং উন্নত করতে ডেটা ব্যবহার করা।

৮. সহযোগিতা এবং সমন্বয়

পরাগ সংযোগকারী সংরক্ষণের জন্য সরকারি সংস্থা, কৃষক, মৌমাছি পালনকারী, সংরক্ষণ সংস্থা, গবেষক এবং জনসাধারণের মতো বিভিন্ন অংশীদারদের মধ্যে সহযোগিতা এবং সমন্বয় প্রয়োজন। নীতিগুলির উচিত সহযোগিতাকে উৎসাহিত করা:

• আন্তঃসংস্থা টাস্ক ফোর্স বা ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করা।
• অংশীদারদের সংলাপ এবং সহযোগিতার জন্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা।
• তথ্য এবং সেরা অনুশীলনগুলি শেয়ার করা।
• যৌথ সংরক্ষণ কৌশল তৈরি করা।

আন্তর্জাতিক সহযোগিতা

পরাগ সংযোগকারীরা অত্যন্ত গতিশীল এবং প্রায়শই জাতীয় সীমানা অতিক্রম করে। তাই, কার্যকর পরাগ সংযোগকারী সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য। এটি নিম্নলিখিত উপায়ে অর্জন করা যেতে পারে:

• পরাগ সংযোগকারী সংরক্ষণের উপর আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং কনভেনশন তৈরি করা।
• দেশগুলির মধ্যে তথ্য এবং সেরা অনুশীলনগুলি শেয়ার করা।
• আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গবেষণা এবং পর্যবেক্ষণ প্রচেষ্টাকে সমর্থন করা।
• উন্নয়নশীল দেশগুলিকে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা।

উদাহরণ: জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) দ্বারা সমন্বিত আন্তর্জাতিক পরাগ সংযোগকারী উদ্যোগ (IPI) বিশ্বব্যাপী পরাগ সংযোগকারীদের সংরক্ষণ এবং টেকসই ব্যবহারকে উৎসাহিত করে।

পরাগ সংযোগকারী নীতি বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ

পরাগ সংযোগকারী নীতি বাস্তবায়ন করা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে কারণ:

• অংশীদারদের মধ্যে স্বার্থের সংঘাত।
• তহবিল এবং সম্পদের অভাব।
• পরাগ সংযোগকারীর সংখ্যা এবং হুমকি সম্পর্কে সীমিত বৈজ্ঞানিক ডেটা।
• স্বার্থান্বেষী মহল থেকে রাজনৈতিক বিরোধিতা।
• প্রবিধান প্রয়োগে অসুবিধা।

এই চ্যালেঞ্জগুলি কাটিয়ে উঠতে, নিম্নলিখিত বিষয়গুলি গুরুত্বপূর্ণ:

• পরাগ সংযোগকারী সংরক্ষণের জন্য ব্যাপক ভিত্তিক সমর্থন তৈরি করা।
• পর্যাপ্ত তহবিল এবং সম্পদ সুরক্ষিত করা।
• জ্ঞানের শূন্যতা পূরণের জন্য গবেষণা পরিচালনা করা।
• স্পষ্ট এবং প্রয়োগযোগ্য প্রবিধান তৈরি করা।
• নীতি-নির্ধারণী প্রক্রিয়ায় অংশীদারদের যুক্ত করা।

বিশ্বজুড়ে পরাগ সংযোগকারী নীতির উদাহরণ

পরাগ সংযোগকারীর সংখ্যা হ্রাস মোকাবিলায় বেশ কয়েকটি দেশ এবং অঞ্চল পরাগ সংযোগকারী নীতি তৈরি করেছে। এখানে কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হল:

যুক্তরাষ্ট্র

২০১৫ সালে প্রকাশিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মৌমাছি এবং অন্যান্য পরাগ সংযোগকারীদের স্বাস্থ্য উন্নীত করার জাতীয় কৌশল, পরাগ সংযোগকারী সংরক্ষণের জন্য একটি ব্যাপক পদ্ধতির রূপরেখা দেয়। এই কৌশলে মৌমাছির কলোনির ক্ষতি কমানো, পরাগ সংযোগকারীর বাসস্থান বৃদ্ধি করা এবং গবেষণা ও শিক্ষার প্রচারের লক্ষ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পোলিনেটর পার্টনারশিপ হল একটি অলাভজনক সংস্থা যা গবেষণা, শিক্ষা এবং বাসস্থান তৈরির মাধ্যমে পরাগ সংযোগকারী সংরক্ষণে নিবেদিত।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন

ইইউ পোলিনেটরস ইনিশিয়েটিভ ইউরোপে বন্য পরাগ সংযোগকারীদের হ্রাস মোকাবিলা করার লক্ষ্যে কাজ করে। এই উদ্যোগে পরাগ সংযোগকারীর বাসস্থান উন্নত করা, কীটনাশকের ব্যবহার কমানো এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বেশ কয়েকটি ইইউ সদস্য রাষ্ট্র তাদের নিজস্ব জাতীয় পরাগ সংযোগকারী কৌশলও তৈরি করেছে।

যুক্তরাজ্য

যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরাগ সংযোগকারী কৌশল ইংল্যান্ডে পরাগ সংযোগকারীর সংখ্যা রক্ষা এবং বৃদ্ধির জন্য একটি কাঠামো নির্ধারণ করে। এই কৌশলটি পরাগ সংযোগকারীর বাসস্থান উন্নত করা, কীটনাশকের ঝুঁকি কমানো এবং গবেষণা ও পর্যবেক্ষণের প্রচারের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।

কানাডা

কানাডা একটি ফেডারেল টেকসই উন্নয়ন কৌশল তৈরি করেছে যা পরাগ সংযোগকারীর স্বাস্থ্য, বিশেষ করে মৌমাছির সাথে সম্পর্কিত লক্ষ্য এবং পদক্ষেপগুলি অন্তর্ভুক্ত করে। প্রদেশগুলিতেও বন্য পরাগ সংযোগকারীদের লক্ষ্য করে বিভিন্ন উদ্যোগ রয়েছে।

ব্রাজিল

ব্রাজিল দেশীয় মৌমাছি প্রজাতিগুলিকে রক্ষা করার জন্য নীতি বাস্তবায়ন করেছে, বিশেষ করে কৃষি এলাকায়। এই নীতিগুলির মধ্যে টেকসই কৃষি পদ্ধতির প্রচার এবং কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

পরাগ সংযোগকারী নীতি তৈরির জন্য সেরা অনুশীলন

বিশ্বজুড়ে দেশ এবং অঞ্চলের অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে, কার্যকর পরাগ সংযোগকারী নীতি তৈরির জন্য এখানে কিছু সেরা অনুশীলন দেওয়া হল:

• ব্যাপক হোন: বাসস্থান হারানো, কীটনাশকের ব্যবহার, জলবায়ু পরিবর্তন, রোগ এবং আক্রমণাত্মক প্রজাতি সহ পরাগ সংযোগকারীদের সমস্ত প্রধান হুমকি মোকাবিলা করুন।
• সহযোগিতামূলক হোন: নীতি-নির্ধারণী প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন অংশীদারদের যুক্ত করুন।
• বিজ্ঞান-ভিত্তিক হোন: সেরা উপলব্ধ বৈজ্ঞানিক প্রমাণের উপর ভিত্তি করে নীতি তৈরি করুন।
• অভিযোজিত হোন: নীতিগুলির কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ করুন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সেগুলিকে অভিযোজিত করুন।
• জবাবদিহি করুন: স্পষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য স্থাপন করুন এবং সেগুলি অর্জনের দিকে অগ্রগতি ট্র্যাক করুন।
• সু-অর্থায়িত হোন: নীতি বাস্তবায়নের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল এবং সম্পদ সুরক্ষিত করুন।

উপসংহার

এই অত্যাবশ্যক প্রজাতিগুলিকে রক্ষা করার এবং আমাদের বাস্তুতন্ত্র ও খাদ্য সরবরাহের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য পরাগ সংযোগকারী নীতি অপরিহার্য। স্থানীয় প্রেক্ষাপট বোঝা, স্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ, বাসস্থান রক্ষা, কীটনাশকের প্রভাব হ্রাস, টেকসই কৃষি পদ্ধতির প্রচার, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ এবং সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা এমন কার্যকর নীতি তৈরি করতে পারি যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পরাগ সংযোগকারীদের সুরক্ষিত রাখবে। পরাগ সংযোগকারীদের মুখোমুখি হওয়া বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদিও পরাগ সংযোগকারী নীতি বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ রয়েছে, অন্যদের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবং সেরা অনুশীলনগুলি গ্রহণ করে আমরা এই চ্যালেঞ্জগুলি কাটিয়ে উঠতে পারি এবং পরাগ সংযোগকারী ও মানুষ উভয়ের জন্য একটি আরও টেকসই ভবিষ্যৎ তৈরি করতে পারি। বিশ্বজুড়ে পরাগ সংযোগকারী নীতির উদাহরণগুলি এই অপরিহার্য প্রাণীদের রক্ষা করতে চাওয়া নীতিনির্ধারক এবং অংশীদারদের জন্য মূল্যবান শিক্ষা প্রদান করে।

কার্যকরী অন্তর্দৃষ্টি

• নীতিনির্ধারক: আপনার অঞ্চলে ব্যাপক এবং কার্যকর পরাগ সংযোগকারী নীতি তৈরির জন্য এই নির্দেশিকাটিকে একটি কাঠামো হিসাবে ব্যবহার করুন। নির্দিষ্ট স্থানীয় চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগগুলি বিবেচনা করুন এবং নীতি তৈরির প্রক্রিয়ায় অংশীদারদের যুক্ত করুন।
• কৃষক: আপনার খামারে পরাগ সংযোগকারী-বান্ধব পদ্ধতি প্রয়োগ করুন, যেমন হেজরো (বেড়ার মতো গাছ) এবং কভার ক্রপ (মাটি ঢাকার ফসল) লাগানো, এবং কীটনাশকের ব্যবহার কমানো। কৃষি-পরিবেশ প্রকল্পে অংশগ্রহণের কথা বিবেচনা করুন যা পরাগ সংযোগকারী সংরক্ষণের জন্য আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করে।
• মৌমাছি পালনকারী: পরাগ সংযোগকারীর স্বাস্থ্য এবং বাসস্থান উন্নীত করতে কৃষক এবং নীতিনির্ধারকদের সাথে কাজ করুন। পরাগ সংযোগকারীর সংখ্যা ট্র্যাক করতে গবেষণা এবং পর্যবেক্ষণ প্রচেষ্টায় অংশ নিন।
• সংরক্ষণ সংস্থা: শক্তিশালী পরাগ সংযোগকারী নীতির জন্য সওয়াল করুন এবং মাঠ পর্যায়ের সংরক্ষণ প্রচেষ্টাকে সমর্থন করুন। পরাগ সংযোগকারীদের গুরুত্ব সম্পর্কে জনগণকে শিক্ষিত করুন এবং তাদের সংরক্ষণ কার্যক্রমে যুক্ত করুন।
• ব্যক্তি: পরাগ সংযোগকারী-বান্ধব বাগান এবং ল্যান্ডস্কেপ তৈরি করুন এবং কীটনাশক ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। স্থানীয় কৃষক এবং ব্যবসাগুলিকে সমর্থন করুন যারা পরাগ সংযোগকারী সংরক্ষণে উৎসাহিত করে। পরাগ সংযোগকারীদের গুরুত্ব সম্পর্কে নিজেকে এবং অন্যদের শিক্ষিত করুন।